নারী-পুরুষ সংমিশ্রণের বিধান
এ আইটেমটি নিম্নোক্ত ভাষায় অনূদিত
ক্যাটাগরিসমূহ
Full Description
সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
সৌদি আরবের ইলমী গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে নিম্নবর্ণিত বিষয়টি জিজ্ঞাসা করা হয়েছে:
এক ব্যক্তি এখনো নারী-পুরুষ সংমিশ্রণ সমস্যায় ভুগছে। আপনারা যদি তার মাতা-পিতা ও ভাই-বেরাদরকে এ ব্যাপারে উপদেশ দিতেন, যাতে সে স্ত্রী নিয়ে তার মাতা-পিতার অনুমতিসহ দূরে থাকতে পারে এবং উত্তমরূপে শরী'আতে বিধান চর্চায় সক্ষম হয়?
উত্তরে তারা বলেছেন: গায়রে মাহরাম অর্থাৎ যাদের মাঝে বিবাহ বৈধ এমন নারী-পুরুষের সংমিশ্রণ, নারীদের কর্তৃক তাদের চেহারা ও শরীরের কিছু অংশ উন্মুক্ত করণ অন্যায়, অবৈধ।
আল্লাহ তা'আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হুকুম দিয়েছেন তিনি যেন তাঁর স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মুমিন নারীদেরকে পর্দা করার ব্যাপারে নির্দেশ দেন। আল্লাহ তা'আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ قُل لِّأَزۡوَٰجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَآءِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ يُدۡنِينَ عَلَيۡهِنَّ مِن جَلَٰبِيبِهِنَّۚ ذَٰلِكَ أَدۡنَىٰٓ أَن يُعۡرَفۡنَ فَلَا يُؤۡذَيۡنَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ٥٩﴾ [الاحزاب: ٥٩]
“হে নবী, তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বল, তারা যেন তাদের জিলবাবের কিছু অংশ তাদের নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়, তাদেরকে চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে। ফলে তাদেরকে কষ্ট দেওয়া হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু"। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৯]
অন্যত্র আরও বলেন:
﴿وَإِذَا سَأَلۡتُمُوهُنَّ مَتَٰعٗا فَسَۡٔلُوهُنَّ مِن وَرَآءِ حِجَابٖۚ ذَٰلِكُمۡ أَطۡهَرُ لِقُلُوبِكُمۡ وَقُلُوبِهِنَّۚ﴾ [الاحزاب: ٥٣]
“আর তোমরা যখন নবীপত্নীদের কাছে কোনো সামগ্রী চাইবে তখন পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটি তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্র"। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৩]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ হাদীসে এসেছে, তিনি বলেছেন: “একজন পুরুষ একজন নারীকে নিয়ে একাকী হলেই শয়তান তাদের তৃতীয়জন হয়ে যায়"।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন: “স্ত্রী অথবা মাহরাম ব্যতীত কোনো পুরুষ কোনো নারীর কাছে কখনোই রাত্রীযাপন করবে না"।
সে হিসেবে পরিবারের সকল সদস্যের উচিত, আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়নে একে অন্যকে সাহায্য করা, যাতে সবাই সত্যিকার অর্থে মুমিন হতে সক্ষম হয়।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
﴿وَٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتُ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِيَآءُ بَعۡضٖۚ يَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَيُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَيُطِيعُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥٓۚ أُوْلَٰٓئِكَ سَيَرۡحَمُهُمُ ٱللَّهُۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٞ ٧١﴾ [التوبة: ٧١]
“আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় ও অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়"। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৭১]
আল্লাহ আরো বলেন,
﴿وَمَا كَانَ لِمُؤۡمِنٖ وَلَا مُؤۡمِنَةٍ إِذَا قَضَى ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥٓ أَمۡرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ ٱلۡخِيَرَةُ مِنۡ أَمۡرِهِمۡۗ وَمَن يَعۡصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلَٰلٗا مُّبِينٗا ٣٦﴾ [الاحزاب: ٣٦]
“আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোনো নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজেদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না, আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে"। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৩৬]
আল্লাহ সবাইকে তাওফীক দান করুন।
গবেষণা ও ফাতওয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটি
আব্দুল্লাহ ইবন গুদাইয়ান
আব্দুর রাযযাক আফীফি
আব্দুল আযীয ইবন বায
[স্থায়ী কমিটির ফাতওয়া (১৭/৯১-৯৩) ফাতওয়া নং (১৪৭৮২)-এর দ্বিতীয় প্রশ্ন]