মহররমের দশ তারিখের পাশাপাশি নয় তারিখেও সাওম পালন করা মুস্তাহাব
এ আইটেমটি নিম্নোক্ত ভাষায় অনূদিত
ক্যাটাগরিসমূহ
উৎস
Full Description
মহররমের দশ তারিখের পাশাপাশি নয় তারিখেও সাওম পালন করা মুস্তাহাব
استحباب صيام تاسوعاء مع عاشوراء
< বাংলা - بنغالي - Bengali >
মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
محمد صالح المنجد
অনুবাদক: মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
ترجمة: محمد سيف الإسلام
مراجعة: د/ أبو بكر محمد زكريا
মহররমের দশ তারিখের পাশাপাশি নয় তারিখেও সাওম পালন করা মুস্তাহাব
প্রশ্ন: আমি এবার আশুরার সাওম রাখতে আগ্রহী। আমি শুনেছি যে আশুরার পূর্বের দিন (তাসু'আ) ৯ মহররমেও সাওম পালন করা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি এ বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন?
উত্তর: আল-হামদুলিল্লাহ
আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আশুরার সাওম রাখলেন এবং (সাহাবীগণকে) এ দিনের সাওম পালন করতে বললেন, তারা প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! দিনটিকে তো ইয়াহূদী-নাসারারা সম্মান করে থাকে। প্রত্যুত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ চাহে তো আগামী বছর এলে আমরা নয় তারিখেও সাওম পালন করব। কিন্তু আগামী বছর আসার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মারা যান"। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯১৬)
ইমাম শাফে'ঈ ও তার মাযহাবের আলেমগণ, < বাংলা - بنغالي - Bengali >ইমাম আহমদ, ইসহাক ও অন্যান্যদের বক্তব্য হলো, নয় ও দশ এ উভয় দিন মিলিয়ে সাওম রাখা মুস্তাহাব। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশ তারিখে সাওম পালন করেছেন এবং নয় তারিখে সাওম পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
অতঃপর বলা যায় যে, আশুরার সাওমের বিভিন্ন পর্যায় রয়েছে। সর্বনিম্ন পর্যায় হলো শুধু আশুরা দিবসে সাওম রাখা। আর এর উপরের ধাপ হলো আশুরা দিবসের সাথে নয় তারিখেও সাওম রাখা। এরও উপরের পর্যায় হলো আরও বেশি সাওম রাখা। কেননা মহররম মাসে যত বেশি সাওম পালন করা যায় ততোই উত্তম।
দশ-ই মহররমের সাওমের সাথে নয়-ই মহররমে সাওম পালনের হিকমত কী? যদি এ প্রশ্ন করা হয়, তবে এর উত্তরে বলব: ইমাম নববী রহ. বলেছেন, আমাদের মাযহাবের উলামা ও অন্যান্য আলেমগণ, নয় তারিখের সাওমের বেশ কয়েকটি হিকমত বর্ণনা করেছেন:
এক. এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধাচরণ করা। কেননা তারা কেবল দশ তারিখেরই সাওম রাখত। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে এরূপই বর্ণিত হয়েছে।
দুই. দশ তারিখের সাওমের সঙ্গে অন্য আরেক দিনের সাওম সংযুক্ত করা। উদাহরণত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু শুক্রবারে ভিন্নভাবে সাওম রাখা থেকে বারণ করেছেন।
তিন. দশ তারিখের সাওম যাতে নিশ্চিতভাবে সম্পন্ন হয় তারই সতর্কতা হিসেবে নয় তারিখেও সাওম রাখা। কেননা চাঁদের হিসাব-নিকাশে ভুল হতে পারে, অতঃপর নয় তারিখেই দশ তারিখ হতে পারে।
উল্লিখিত মতামতগুলোর মধ্যে অধিক শক্তিশালী হলো, আহলে কিতাবের বিপরীত কর্ম সম্পাদনের বিষয়টি। শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যা রহ. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহলে কিতাবের সাদৃশ্য অবলম্বন নিষিদ্ধ করেছেন। সেই সূত্রে আশুরার ক্ষেত্রেও বলেছেন: (যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি তবে অবশ্যই নয় তারিখে সাওম পালন করব।)। (আল-ফাতওয়া ওয়াল কুবরা, খণ্ড-৬)
ইবনে হাজার রহ. (যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি তবে অবশ্যই নয় তারিখে সাওম পালন করব) এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নয় তারিখ সাওম রাখার ইচ্ছা ব্যক্ত করার অর্থ হতে পারে যে, তিনি সতর্কতার জন্য দশ তারিখের সাথে নয় তারিখেরও সাওম রাখবেন অথবা তিনি ইয়াহূদী-নাসারাদের বিরুদ্ধাচরণের জন্য এরূপ করবেন। ইমাম মুসলিম কর্তৃক বর্ণিত হাদীসগুলো এ দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে"। (ফাতহুল বারি: ৪/২৪৫)